গুগল (Google):
আজ আমরা আধুনিক সভ্যতার মানুষ । আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের তুলনায় আজ আমরা অনেকটাই আধুনিক ভাবে জীবন যাপন করছি । আজ আমরা প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেট এর উপর নির্ভরশীল । আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করে থাকি । ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমাদের জীবন আমরা আরাম-আয়েশ এবং অনেকটাই সহজ করে ফেলেছি । আর যদি ইন্টারনেট এর কথা বলাই হয় তাহলে যার নাম সবার আগে আমাদের মনে আসে তা হলো গুগোল। গুগল হল সার্চ ইঞ্জিন বা সার্চ সেবা প্রদানকারী ওয়েবসাইট। প্রচলিত একটি কথা আছে ” পৃথিবীতে কি এমন আছে যে গুগলে নেই ” । কথাটা অনেকটাই সত্যি । আজ আমরা গুগল সম্পর্কে জানব । কিভাবে এই গুগলের অগ্রযাত্রা শুরু হলো সেটা নিয়ে আজকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব ।
নামঃ গুগোল (Google) |
সর্বপ্রথম নামঃ গুগোল ইনকর্পোরেট ( 1998 ) |
প্রতিষ্ঠাকালঃ 1998 সালের 4 ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র |
প্রতিষ্ঠিতাঃ লেরি পেজ ও সের্গেই ব্রিণ ( স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্র ) |
সদর দপ্তরঃ ক্যালিফোর্নিয়া , যুক্তরাষ্ট্র |
বাণিজ্য অঞ্চলঃ সমগ্র বিশ্বব্যাপী |
কর্মীসংখ্যাঃ এক লক্ষ চোদ্দো হাজার ছিয়ানব্বই জন ( 2019 সাল ) |
মূল প্রতিষ্ঠানঃ আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড |
ওয়েবসাইটঃ Google |
গুগোল এলএলসি (Google LLC) . যার পূর্ণরূপ হল গুগোল লিমিটেড লায়াবেলিটি কোম্পানি । এটি একটি আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। যেটা ইন্টারনেট ভিত্তিক সেবা প্রযুক্তি কম্পানি। গুগল কোম্পানি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সেন্টারে এক মিলিয়নের বেশি সার্ভার চালায়। গুগল কোম্পানি ৫০০ কোটির উপরে অনুসন্ধানের অনুরোধ পায় । এটি প্রতিদিন প্রায় ২৪ পেটাবাইট ব্যবহারকারী কর্তৃক ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে। ২০১৯ সালে অ্যালেক্সা জরিপ অনুযায়ী আমেরিকার এই প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী হিসেবে বলে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাইট যেমন ইউটিউব, ব্লগার এর মত ১০০ টিরে স্থান পায়। আর এই গুগলি বিশ্বের সর্বপ্রথম কপিরাইট এবং গোপনীয়তা আবিষ্কার করে।
২৬ শে মার্চ ১৯৭৩ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে জন্মগ্রহণ করেন লেরি পেজ । তার বাবার নাম ছিল কাল্র ভিক্টর । তিনি মিশিগানের টেস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার এর ইন্টেলিজেন্স এর সুদক্ষ অধ্যাপক । তার মায়ের নাম ছিল গ্লোরিয়া পেজ । তার মা মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের প্রোগ্রামিং শেখাতে । ল্যারি পেজের মা-বাবা কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াতেন বলে তাদের ঘরে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে অনেক বই থাকত যেগুলো তিনি পড়তেন এভাবেই তিনি ছোটকাল থেকেই কম্পিউটার সমস্ত বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে ওঠেন । এজন্য ছোটবেলা থেকেইকম্পিউটার এবং প্রোগ্রামিং সম্পর্কে অনেক ধারণা আয়ত্ত করে ফেলে । আর লেরি পেজ এর বড় ভাইও একজন অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন । তিনি মন্টেসরি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন ।সেখানকার পরিবেশের সৃজনশীলতা পরবর্তী জীবনের কালে তার অনেক প্রভাব পড়েছিল ।একই সময় তিনি সেখানকার একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে “সোলার কার টিমের” যোগদান করেন । তারপর তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য ভর্তি হয় ।
১৯৯৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি দুজন ছাত্র সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন । তখনকার যে সার্চ ইঞ্জিনগুলো ছিল সেগুলো সঠিক তথ্য বিনাশ করতে অতটা সক্ষম ছিল না । তখন তারা পরিকল্পনা করে তখনকার তন্ত্র শেরে নতুন তন্ত্র এর মাধ্যমে এবং সম্পূর্ণ নতুন কৌশলে একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করা । যেটা পরস্পরের ওয়েবসাইটের সাথে ক্রিয়া করে সঠিক ফলাফল নির্দেশ করবে । ওই দুজন ছাত্র এর নাম দেয় পেজর্যাংক । এক্ষেত্রেএকটি ওয়েবসাইটের পাতাগুলো কতটা যুক্তিসঙ্গত এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ তার উপর ভিত্তি করে আসল সাইটে সেই তথ্য প্রকাশ করা হয় ।
লেরি পেজ ও সের্গেই এই সার্চ ইঞ্জিনের নাম দেয় “ব্যাকরাব” ।
এই নাম দেওয়ার মূলত কারণ ছিল । এই প্রক্রিয়ায় সকল সাইডের ব্ল্যাক লিংকগুলো চিহ্নিত করা হতো যার জন্য তারা দুজন এই নামটি দেয় । পরবর্তীতে তারা নাম চেঞ্জ করে গুগল (Google) নাম রাখে । এই নামটি মূলত ভুল করে রাখা হয়েছিল । Google মূলত অর্থ হলো একের পরে 100 শূন্য । পরবর্তীতে এই নামটি রাখা হয় কারণ এখানে সারা পৃথিবীর তথ্য পাওয়া যায় এই জন্য এই নামটি আর পরিবর্তন করা হয়নি ।
১৯৯৭ সালে গুগোল প্রথম ডোমেইন নিবন্ধন করেন । ১৯৯৮ সালের ৪ ই সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে গুগল আত্মপ্রকাশ হয় । প্রথমদিকে এই সার্চ ইঞ্জিন গুগোল স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটের অধীনে চলত। তখন গুগলের ঠিকানা ছিল google.stantford.edu
এই সার্চ ইঞ্জিনের 14% শেয়ার তাদের এবং সুপার ভোটিং ক্ষমতা মাধ্যমে 56% শেয়ারে স্টক হোল্ডার কে নিয়ন্ত্রণ করে । ১৯৯৮ সালে গুগলকে তারা প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন । ১৯ শে আগস্ট ২০০৪ সালে এটি পাবলিক কোম্পানিতে পরিণত হয় । পরে গুগলের ঠিকানা হয় google.com
প্রথম এটি চালনা করা হয় লেরি পেজ ও সের্গেই এদের এক বন্ধুর সচল গ্যারেজ থেকে । ওই গ্যারেজের নাম ছিল ” সুজান ওচিচকি “। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সিলভারএস্টাইনে থাকতেন । তাদের এই সার্চ ইঞ্জিনে প্রথম নিয়োগ করে ওই ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্ত একটি ছাত্র ।
১৯৯৯ সালে লেরি এবং ব্রিনের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে ফলে তারা সিদ্ধান্ত নেতারা তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দিবে । তারা জর্জ বেইলির কাছে যান কোম্পানি বিক্রি করার জন্য । তারা তার কাছে এক মিলিয়ন ডলার বিক্রি করার প্রস্তাব দেয় । কিন্তু তিনি তার এই প্রস্তাবকে নাকচ করে দেন তার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার জন্য । তারপর তিনি বিনিয়োগকারীর তীব্র সমালোচনা করেন । ব্রিন ও পেজের সাথে $৭৫০.০০০ টাকা পর্যন্ত দর কষাকষি করে । ১৯৯৯ সালে ৭ই জুন $২৫ মিলিয়ন এর অর্থায়নের ঘোষণা করে । যাতে প্রধান মূলধন বিনিয়োগ কারি প্রতিষ্ঠান নাম হল ক্লাইনার পারকিনস কওফিল্ড বেয়ারস ও সিকিয়া ক্যাপিটাল ।
গুগলের এই আইপি সাড়ে পাঁচ বছর পর । লেরি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন ও এরিক একসঙ্গে 20 বছর কাজ করার জন্য সম্মত হন । কোম্পানিতে মোট শেয়ার সংখ্যা ছিল ১৯,৬০৫,০৫২ টি । এবং প্রতিটি শেয়ার $৮৫ টাকায় বিক্রি করে । আর এই শেয়ারগুলো অনলাইনে নিলামে বিক্রি করা হয় । রেখার সময়ের মধ্যে সবগুলো শেয়ারই বিক্রি হয়ে যায় । যার মূল্য দাঁড়ায় $১.৬৭ বিলিয়নের বিক্রি হয় । যা পরে গুগল কোম্পানির মূলধন দাঁড়ায় $২৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি । ২০১৪ সালে এই মূলধন বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় $৩৯৭ বিলিয়ন ডলারে । গুগোল সবসময় প্রদান শেয়ারের $২৭১ বিলিয়ন ডলার তাদের নিজেদের হাতে রাখে এবং নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে গুগলের বিভিন্ন কর্মীরা সহজে মিলিনীয়র হয়ে যায় । গুগোল শুধু গুগলের আইপি নয় ইয়াহু কেউ কিছু শেয়ার দিয়েছিল । গুগোল ইয়ার হয়েছে যে পরিমাণ শেয়ার করে তার ৮.৪ শতাংশ লাভবান হয় ।
গুগোল শেয়ার ছড়ানোর পর সবাই ধারণা করে গুগোল এর সংস্কৃত সম্ভবত পরিবর্তিত হবে । যার মূল কারণ হলো google-এর কর্মীরা রাতারাতি মিলিয়নিয়ার হয়ে যাচ্ছিলেন । কিন্তু লেরি ও ব্রেন জানায় যে তাদের সংস্কৃত কোন পরিবর্তন করা হবে না ।
গুগোল যখন তাদের আইপি ছেড়ে দেয় তখন তাদের আইপি ছাড়াও ভালো মূলধন আয় করতে থাকে । ২০০৭ সালে ৩১ শে অক্টোবর গুগল কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ দাম গিয়ে দাঁড়ায় $৭০০ । যার মূলে অনলাইন বিজ্ঞাপন এবং আয়ের বাজারকে ধরা হয় । কোম্পানিটির নাসডাক শেয়ারের জন্য টিকা চিহ্নের সাথে “googl” ও “goog” নিয়ে বাজারে টিকা চিহ্নের সাথে GGQ1 নামে অন্তর্ভুক্ত হয় । ২০১৫ সালের শেষ এর দিকে এই টিকা চিহ্নেকে গুগল হোল্ডিং কম্পানি বলাতো । ১৯৯৯ সালে কম্পানিটি তাদের অফিস ক্যোলিফ্রোনিয়ায় সরিয়ে নেয় । তারপরে তারা বিজ্ঞাপন অর্থায়ন ভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন এর প্রতিষ্ঠাতা করেন । তারপর থেকে তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন বিক্রি করা শুরু করে । বিজ্ঞাপনগুলো লেখার মান যেন নষ্ট না করে সেদিকে নজর রাখা হতো । তাই লেখাগুলো কনটেন্ট আকারে থাকতো তাতে পাঠকের কোন সমস্যা হতো না । আর এগুলো বিক্রি করা হতো নিলাম দর অনুযায়ী , আর প্রতিটি ক্লিকের জন্য 5 সেন্ট করে দেওয়া হতো । এটি মূলত ক্লিক এর উপর ভিত্তি করে দেওয়া হতো । কিন্তু এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দায়ের করে । পরবর্তীতে মামলাটি কোর্টের বাইরে সমাধান করা হয় । গুগল কোম্পানি তাদের কিছু সাধারণ শেয়ার ইয়াহুকে দিয়ে পদ্ধতিটি ব্যবহার করার লাইসেন্স বের করে ।
২০১১ সালের মে মাসে গুগোল প্রথমবারের মতো 1 বিলিয়ন ভিজিটর আর করে মাইলফলক সৃষ্টি করে । যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল । যেটি গত বছরের তুলনায় ৮.৪ ভাগ বেশি । ২০১৩ সালে গুগোল কম্পানি অফিশিয়ালি ভাবে ঘোষনা করে তারা $৫০ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক আয় করেছে । এটি গত বছরের তুলনায় 12 বিলিয়ন বেশি ছিল । এক বছরের কোন সময় তারা 12 বিলিয়ন প্লাস তাদের আয় বাড়িছে ।
গুগলের প্রথম অর্থায়ন করা হয় ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে । $১০০.০০০ টাকা প্রদান করা হয় সর্বপ্রথম । এই অর্থায়ন করা হয় গুগল কোম্পানির যৌথ মালিকানায় যাবার পূর্বে । এই টাকা প্রদান এ্যান্ডি ব্যাকওলশাইম । তিনি সান মাইক্রোসিস্টেম সহ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ।
নিত্য নতুন পণ্য এবং সেবার মান বাড়িয়ে গুগোল আস্তে আস্তে নিজেদের পরিধি এবং সম্মান বাড়িয়ে তুলেছে । আস্তে আস্তে বিভিন্ন কোম্পানি কিনে তাদের নিজেদের সাথে একত্র করে তারা তাদের মান এইরকম ভাবে বাড়িয়েছে । এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার এবং অংশ কিনে তারা তাদের কোম্পানি এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে । এর ফলে গুগোল নিজেদের সার্চ ইঞ্জিন সহ আরো বিভিন্ন সেবা তারা সৃষ্টি করেছে । তারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং পণ্য দিয়ে সারা পৃথিবীর চেহারা পাল্টে দিয়েছিল । ইন্টারনেট দুনিয়ার শাসনকর্তা এই গুগল কোম্পানি আর কতদিন নতুন নতুন ফিচার যোগ করে এই বিশাল পৃথিবীটাকে সংকুচিত করে আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে । তার মধ্যে জনপ্রিয় কিছু সেবারনাম নিচে উল্লেখ করা হলো-
ইমেইল
সামাজিক নেটওয়ার্ক
ভিডিও শেয়ারিং
অফিস প্রডাক্টিভিটি
গুগল ম্যাপস
ইউটিউব
গুগোল +
গুগোল ড্রাইভ
গুগোল ট্রানসলেশন
গুগোল কম্পানি সারা বিশ্বের ম্যাপ , প্রত্যন্ত অঞ্চলের ম্যাপ , সঠিক সড়ক নির্দেশনা , এবং নির্দিষ্ট বাড়িঘর প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার জন্য তারা নিজস্ব স্যাটেলাইটের স্থাপন করে । যাকে আমরা Google map নামে সবাই চিনি । এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক অনেক কাজে লাগে । এটির মাধ্যমে আমরা সঠিকভাবে সড়ক নির্দেশনা এবং সঠিক বাড়িঘরের ঠিকানা আমরা পেয়ে যাই । অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চল আছে যেখানে মানুষের যাওয়া সম্ভব না সেখানে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিখুঁত ছবি তোলে আমাদের স্পষ্ট ধারণা দেয় এই গুগল কোম্পানি ।
আর বর্তমান সময়ে ইলেকট্রনিক মেইল এর অনেক গুরুত্ব । এর মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেশে বিদেশে সব জায়গায় আমাদের নিজস্ব মেইল করতে পারি । এটি খুবই নিশ্চিন্তভাবে ব্যবহার করা যায় । যাকে আমরা email নামে চিনি । ২০০৪ সালে ১ ই এপ্রিল সর্বপ্রথম ইমেইল চালু হয় । এখানে 15 গিগাবাইট পর্যন্ত জায়গা সংরক্ষণ করা যায় । আর এটি 16 থেকে 20 গিগাবাইট পর্যন্ত বর্ধিত করা যায় । প্রতি গিগাবাইট এর জন্য $০.২৫ টাকা ফ্রি কাটা হয় ।
এবং গুগোল ড্রাইভ এর মাধ্যমে আমরা ফিরি 8 গিগাবাইট পর্যন্ত স্টরেস ব্যবহার করতে পারি । যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কাজে আমরা ব্যবহার করতে পারি ।
আমাদের পৃথিবীতে অনেক মানুষ বসবাস করেন তাদের সবার ভাষা এক নয় । তাদের একজন এর এক এক ভাষা । আমাদের পক্ষে বিশ্বের সকল ভাষা আয়ত্ত করা সম্ভব নয় । এই বিষয়টি গুগোল চিন্তা করে একটি অভিনব সমাধান বের করেছে । Google translation এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বের যেকোন ভাষা আমাদের নিজেদের মতো করে রূপান্তর করতে পারি এবং বুঝতে পারি । এটি আমাদের জীবনে অনেক কাজে লাগে ।
আজকের সময়ে আমরা প্রায় সকলেই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি । আরে স্মার্টফোন চলে অ্যাপ্লিকেশন দ্বারা । অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া কোন স্মার্টফোনে চলা সম্ভব নয় । আর এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মালিক গুগোল কম্পানি । Google play store এর মাধ্যমে আমরা বিনামূল্যে সকল ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারি ।
১৯১৩ সালে গুগোল কোম্পানিতে ৪৭,৭৫৬ জন লোক কাজ করতো । তাদের এই লোকের মধ্যে ১০.০০০ এরও বেশি লোক সফটওয়্যার ডেভলপার ছিলেন । এরা বিশ্বের চল্লিশটি অফিসে কাজ করতো । কোম্পানিটির প্রথম শেয়ার বাজারে আসে ২০০৪ সালে ।
১৯১৩ সালের শেষের দিকে গুগোল প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন কোম্পানি ক্যালিকো শুরু করার ঘোষণা দেয় ।এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করবে অ্যাপেল এর চেয়ারম্যান লেভিনসন । এই দপ্তরটি মূলত স্বাস্থ্য ও “কল্যাণ ভিত্তিক”।
গুগলের সব সেবার মধ্যে অন্যতম ছিল তাদের সার্চ ইঞ্জিনের সেবাটি । এটি দেশ-বিদেশে খুবই জনপ্রিয় । এখানে যে কোন বিষয়ে সার্চ করলে তার তৎক্ষণাৎ সঠিক উত্তর পাওয়া যায় । তথ্য বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানী বা অফিসের তথ্য আরও নানা ধরনের তথ্যই সার্চ ইঞ্জিনের নাম মাধ্যমে আমরা জানতে পারি । এই সার্চ ইঞ্জিন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ভাষার উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে । বিশ্বের যেকোন ভাষা দিয়ে এখানে সার্চ করা যায় এবং বিশ্বের যেকোন তথ্য পাওয়া যায় । ২০০৯ সালের একটি জরিপে দেখা যায় গুগোল যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে সবচেয়ে প্রধান সার্চ ইঞ্জিন । যার অংশীদারী ছিল ৬৫.৬ শতাংশ । গুগলের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা থাকলেও বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময়ে গুগলের সমালোচনা করে । ২০০৩ সালে দ্য নিউ ইয়ার্ক টাইমস গুগোল এর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে । যাকে বলা হয় তারা ওয়েব বস্তু এবং বিষয়বস্তু ক্যাশ করে রাখায় তা কপিরাইটের শামিল । কিন্তু পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা আদালতে গুগলের পক্ষে রায় দেয় ।
২০১৩ সালে গুগল কোম্পানি তাদের তৃতীয় ভাগের আয় এর রিপোর্ট প্রকাশ করে । তা থেকে দেখা যায় তারা মোট ১৪.৮৯ বিলিয়ন ডলার । যা আগের আগের তুলনায় 12 শতাংশ বেশি । গুগোল কম্পানি তাদের ইন্টারনেট ব্যবসার মাধ্যমে জোগায় ১০.৮ বিলিয়ন ডলার । এর সঙ্গে আরও ছিল বিজ্ঞাপন ক্লিকের হার ।
১৯১৩ সালের নভেম্বর মাসে গুগোল কম্পানি ঘোষণা করে তারা নতুন এক মিলিয়ন বর্গ ফুটের নতুন অফিস স্থাপন করবে । এটি স্থাপন করা হবে লন্ডনে । এখানে প্রায় ৪৫০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে । আর এটি বৃটেনের বাণিজ্যের ইতিহাস হয়ে থাকবে ।
গুগল কোম্পানির আয় এর 99% তাদের বিজ্ঞাপন খাত থেকে । গুগোল ২০০৬ সালে শুধু বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করে ১০.৪৯২ বিলিয়ন ডলার আয় করে । এবং অন্যান্য খাত থেকে প্রায় ১১২ বিলিয়ন ডলার আয় করে। গুগোল অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের বিভিন্ন মাত্রা যোগ করে তারা সকলে থেকে এগিয়ে থাকে । গুগল কোম্পানির ডাবল ক্লিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের শ্রোতাদের মনের মতো করে বিজ্ঞাপন দেয় । গুগল এনালাইটিক্স এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মালিক কোন ব্যবহার করে বুঝতে পারে তার সাইটে কে কোথা থেকে এবং কোন লিংকে কতটা ক্লিক পড়েছে তার সব এই প্রযুক্তি থেকে জানা যায় । গুগোল দুই ভাবে তাদের বিজ্ঞাপনগুলো সাইটে রাখার সুযোগ দেয় । সেগুলো হলো গুগোল অ্যাডওয়ার্ডস এবং গুগল এডসেন্স । এডওয়ার্ডস এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মালিক গন পার পারভিউ বা পার ক্লিক এই দুটি একটি মাধ্যমে ব্যবহার করে তারা বিজ্ঞাপন দিতে পারবে । আর এডসেন্সের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মালিকগণ তাদের ওয়েবসাইটে এড দেখাতে পারবে । এই দুটোর যেকোনো একটি ব্যবহার করে ওয়েব সাইটের মালিক গন অর্থ উপার্জন করতে পারে ।
গুগোল নিজস্ব এড দেখানোর জন্য তারা নিজস্ব একটি সাইট খুলেছে । যার নাম হল “ডেমো পরলাম” । এটি তৈরি করা হয়েছে গুগলের পন্যর ডেমো দেখানোর জন্য । গুগোল কোম্পানিতে কর্মরত লোকেরা প্রতি সপ্তাহে দুটি দলে বিভক্ত হয় প্রতিযোগিতা করে গুগলের প্রযুক্তি নতুনভাবে দেখানোর জন্য ।
গুগোল কম্পানি নিত্য নতুন ভাবে তাদের প্রযুক্তিকে আমাদের সামনে আরও সহজলভ্য ভাবে তুলে ধরছে । এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সাহায্য করে ।
(তথ্যসূত্র; ইন্টারনেট দুনিয়া)