অণুবীক্ষণ যন্ত্র (Microscope):
যে যন্ত্রের সাহায্যে ছোট কোন বস্তুকে বহুগুণ বড় করে দেখা যায় তাকেই অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে। এটি অণুজীববিজ্ঞান পরীক্ষাগারে একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কোন বস্তুকে 100 থেকে 40 লক্ষ গুণ বড় আকারে দেখা যায়। ইংরেজিতে অণুবীক্ষণ যন্ত্র কে microscope বলে। এটি একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ হলো micros অর্থাৎ ক্ষুদ্র এবং skopeein অর্থাৎ দেখা।


অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারকঃ
অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন কারনেইলস ড্রিবেল। শুরুর দিকে লেন্সের বিবর্ধন এর জন্য কাজ ব্যবহার করে আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এর বিবর্তন ক্ষমতা ছিল খুবই দুর্বল। একাদশ শতাব্দীতে চশমার লেন্স ব্যবহার করা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। সেই থেকে আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহার এর সূত্রপাত শুরু হয়। ১৬২০ সালের দিকে ইউরোপে আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের পরিবর্তন ঘটে। ১৬২১ সালে লন্ডনে আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র সর্বপ্রথম প্রদর্শন করা হয়।
কিন্তু যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক সম্পর্কে এখনো সঠিকভাবে কোন ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে কোন কোন দেশে ড্রিবেল কেই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
প্রকারভেদঃ
অণুবীক্ষণ যন্ত্র বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যথাঃ
আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র
ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র
ফেস কস্ট্রাস্ট ইত্যাদি
তবে আমাদের দেশে সাধারণত আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রঃ
আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে মূলত আলোক রশ্মি ব্যবহার করে বস্তুকে বড় করে দেখায়।
আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র সাধারণত দুই প্রকার,
সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র
যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র
পরিচিতি,
যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের অংশসমুহকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
যান্ত্রিক অংশ
আলো সমষ্টিও অংশ
যান্ত্রিক অংশ,
যান্ত্রিক অংশে সাধারণত যা যা থাকে সেগুলো হলো,
বাহু
পিলারের উপর হেলানো স্ক্রু দ্বারা আটকানো অংশকে আর্ম বলে।অণুবীক্ষণ যন্ত্র কে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়ার সময় আমরা এই অংশকে ধরে থাকি। দেহ নলের মাঝখানে দুটো স্ক্রু আছে।
দৈহিক নল
এটি একটি লম্বা নল হাতলের শেষ অংশে এটি যুক্ত থাকে। এটার সাহায্যে দেহ নলকে উপরে নিচে ওঠানামা করানো হয়।
টানা নল
এটা দেহ নলের সাথে বসানো থাকে। প্রয়োজনে এটা উপরে উঠানো যায়।
নাসিকা
এটি দেখতে অনেকটা গোলাকার। এটি দেহ নলের নিচের অংশে আটকানো থাকে। এতে 3 টি পেচকাটা ছিদ্র আছে।
স্হূল ও সূক্ষ্ম স্ক্রু
এটি হাতলের উপরের দুই পাশে থাকে। এটির সাহায্যে টানানল কে ওঠানামা করানো হয়। এটা ইচ্ছামত সংকোচিত এবং প্রসারিত করে আলোকরশ্মি প্রদর্শন করা যায়।
আলোক অংশ,
অভিনেত্র
এটি একটি ছোটনল যেটা টানানোর ভেতরে আটকানো থাকে। এর উপর একটি লেন্স এবং নিচে আরেকটি লেন্স থাকে।
অভি লক্ষ
এটি একটি ছোট নল বিশেষ যেখানে লেন্স আটকানো থাকে। এটা নাসিকের তিনটি ছিদ্র মধ্যে লাগানো থাকে।
কনডেনসার
এটি দুটি লেন্সের সমষ্টি। এটি মঞ্চের সাথে আটকানো থাকে। এটি দ্বারা এদিক-সেদিক ঘুরে লক্ষ বস্তুর উপরে আলো ফেলা যায়।
দর্পণ
এটি একটি বড় কনকেন দর্পণ। এটার সাহায্যে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লক্ষ বস্তুর উপর আলো ফেলা হয়।
এগুলো সমষ্টিগত ভাবে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কোন ক্ষুদ্র বস্তুকে বড় করে দেখা যায় । এই অণুবীক্ষণ যন্ত্র আমাদের জীবনে অনেক কাজে লাগে। এটির সাহায্যে আমরা নানা সুবিধা পেয়ে থাকে । এটির মাধ্যমে আমরা বস্তুর অভ্যন্তরে কি কি গঠন থাকে সেটা জানতে পারি। অণুবীক্ষণ দিয়ে ব্যাকটেরিয়ার ছোট ছোট কোষ দেখা যায়। যাতে গবেষণায় অনেক সাহায্য হয় । এটি আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক কাজে লাগে তাই এর তুলনা অপরিসীম ।
তথ্যসূত্রঃ
১। ল্যাবটেক্স