কম্পিউটার প্রোগ্রামিংঃ
মানুষের সাথে কথাবলার জন্য যেমন ভাষা ব্যবহার করতে হয় তেমনি কম্পিউটার এর সাথে যোগাযোগ করতে হলে বা কম্পিউটার দিয়ে নিজের কাজ করিয়ে নিতে হলে ভাষার প্রয়োজন হয়। আর কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনকারী এই ভাষাকে বলা হয় প্রোগ্রামিং ভাষা (Programming languages) বা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং (Computer programming)। অর্থাৎ,
প্রোগ্রামিং ভাষা বা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গাণিতিক যুক্তি দ্বারা কম্পিউটারকে কোন নির্দিষ্ট কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া যায়।
কম্পিউটার মানুষের সাধারণ ভাষা বুঝতে পারে না। কম্পিউটার শুধু বোঝে 0, 1 বাইনারি সংখ্যা দুটি। 1 মানে বিদ্যুৎ আছে আর 0 মানে বিদ্যুৎ নেই। এর মাধ্যমে ই কম্পিউটার সবকিছু করে। 0, 1 এর মাধ্যমে যে প্রোগ্রামিং লেখা হয় তাকে মেশিন ভাষাও বলা হয়। কিন্তু এই 0, 1 দিয়ে প্রোগ্রাম লেখাটা সহজ কাজ নয়। তাই সহজে প্রোগ্রামিং লেখার জন্য ধিরে ধিরে উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষার উদ্ভব হয়েছে। ফলে প্রোগ্রামিং তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়েছে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে মুলত কম্পিউটার কে নির্দেশ দেওয়া হয় তাই এটা মানুষের বোধগম্য ভাষার থেকে আলাদা হয়।
প্রকারভেদঃ
এখন বর্তমানে অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ভাষা প্রচলিত আছে যেমনঃ সি, পাইথন, জাভা স্ক্রিপ্ট, জাভা, পিএইচপি ইত্যদি। ১৯৪৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ভাষা আবিষ্কার হয়েছে এই ভাষাকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজন্মের ভাষায় ভাগ করা হয়েছে যেমন। প্রথম প্রজন্মের ভাষাকে আবার মেশিন ভাষাও (১৯৪৫-১৯৪৯ইং) বলে। এরপর এলো দ্বিতীয় প্রজন্মের ভাষা আ্যসেম্বলি ভাষা (১৯৫০-১৯৫৯ইং)। এরপর ৩য় প্রজন্মের ভাষা (১৯৬০-১৯৬৯ইং) যা ছিলো উচ্চ স্তরের ভাষা। এরপর ১৯৭০ সালে এলো আতি উচ্চস্তরের ভাষা এটা ছিলো চতুর্থ প্রজন্মের ভাষা। পঞ্চম প্রজন্মের ভাষা এলো ১৯৮০ সালে যেটা এখনো বর্তমান এবং একে বলা হয় স্বাভাবিক ভাষা। তো এগুলো ছিলো বিভিন্ন প্রজন্মের ভাষা। আবার প্রোগ্রাম তৈরির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভাষাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয় যেমন: উচ্চ স্তরের ভাষা, নিম্ন স্তরের ভাষা, আতি উচ্চস্তরের ভাষা, মধ্যম স্তরের ভাষা, স্বাভাবিক ভাষ,।
কম্পিউটার সরাসরি বুঝতে পারে এরকম ভাষাকে নিম্নস্তরের ভাষা বলে। নিম্ন স্তরের ভাষা ২ প্রকার মেশিন ভাষা ও আসেম্বলি ভাষা। মধ্যেস্তরের ভাষা মূলত প্রোগ্রামার ও কম্পিউটার দুজনের ই বোধগম্য এবং খুব সহজে কম্পাইলার করে এই ভাষাকে মেশিন ভাষায় রুপান্তরিত করা যায়। যেমনঃ c, Forth, Wordsrar,Dabse.। কম্পিউটারকে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন সাইন্সটিস্টরা ১৯৫০ সাল থেকে গানিতিক সূএ ব্যবহার করে ইংরেজি ভাষার মতো করে প্রোগ্রামিং ভাষা বানাতে চেষ্টা করেন এবং আমেরিকার ড. গ্ৰেস হপার Math-matic, flow-matic, A2 নামে তিনটি ভাষা সৃষ্টি করেন এই ভাষাগুলোকে মূলত আধুনিক ভাষার পূর্বসুরী মনে করা হয়। এরপর ধিরে ধিরে অনেক প্রোগ্রামিং ভাষা আসতে শুরু করে যেগুলো মানুষের বোধগম্য বর্ণ শব্দ ও সংকেত ব্যবহার করে প্রোগ্রাম রচনা করা যায়। স্বভাবিক ভাষা বা মানুষের মুখের ভাষা হলো পঞ্চম প্রজন্মের ভাষা। মানুষের মুখের ভাষা বলতে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ভাষা ইত্যাদি ভাষাকে বুঝায়।